ফের রাবি প্রশাসনিক ভবনে ‘অবৈধ’ নিয়োগপ্রাপ্তদের তালা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: কর্মস্থলে যোগদানের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসনিক ভবনে ফের তালা দিয়েছে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তরা। রোববার (২০জুন) দুপুরে তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয়। এর আগে শনিবার (১৯ জুন) থেকে প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে রোববার সকালে তালা খুলে দিলেও দুপুরের দিকে ফের তালা দেন তারা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান মেয়াদের শেষ দিন গত ৬ মে অস্থায়ী ভিত্তিতে (অ্যাডহক) ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে শিক্ষক পদে ৯ জন, কর্মকর্তা পদে ২৩ জন, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পদে ৮৫ জন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে ২৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদের কর্মস্থলে যোগদান স্থগিত রেখেছেন বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা।

নিয়োগপ্রাপ্তদের দাবি, রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা তাদের বলেছিলেন প্রশাসনে ভবনে তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। তাই তারা প্রশাসন ভবন খুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু উপাচার্য পরবর্তীতে ভিন্ন কথা বলছেন। তিনি আজ প্রশাসনিক ভবনে আসতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। তাই তারা ফের তালা ঝুলিয়েছেন।

নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, উপাচার্যের কথায় আমরা বিশ্বাস করে তালা খুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি পরবর্তীতে কথা রাখেন নি। তিনি বাসায় থেকে অফিস করছেন। তাই আমরা তালা দিয়েছি। আমাদের কর্মস্থলে পদায়ন না করা হলে কোনো প্রশাসনিক কার্যক্রম চলবে না।

জানতে চাইলে রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, আমি তাদের বলেছিলাম দেখা করবো। কিন্তু আমি মানসিকভাবে কিছুটা আপসেট। তাই প্রশাসনিক ভবনে যাওয়া হয় নি। তবে তাদের দু’একজনকে দেখা করতে বাসবভনে আসতে বলেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবি আমার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তাদের বিষয়টি সমাধানের জন্য জানিয়েছি। মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ না নিলে কিছু করার নেই।

প্রসঙ্গত, গত ৬ মে উপাচার্য হিসেবে শেষ কার্যদিবস পালন করেন অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। মেয়াদের শেষ দিনেই অ্যাডহকে নিয়োগ দেন ১৪১ জনকে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান, স্ত্রী ও স্বজন, ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মী ও সাংবাদিক রয়েছেন।

বিতর্কিত এই নিয়োগকে অবৈধ উল্লেখ করে এদিন সন্ধ্যায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তদন্ত করে গত ২৩ মে তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এতে এ নিয়োগকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করা হয়। তদন্ত কমিটি এ নিয়োগে সাবেক উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে।

ইউকে/এমইউ/এসএম