শাটডাউনে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: অর্থায়নের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় অচলাবস্থায় পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা ১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা ১ মিনিট) থেকে কার্যত শাটডাউন শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা জানায়, ১৯৮০ সালের পর অন্তত ১৫ বার মার্কিন সরকার আংশিকভাবে বন্ধ হয়েছে। তবে এবার পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, কারণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, এই সুযোগে তিনি সরকারি খাতের আকার ছোট করার উদ্যোগ নেবেন।

এ নিয়ে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কিছু করতে পারি যা ডেমোক্র্যাটদের জন্য ভালো হবে না। তাদের পছন্দের কর্মসূচি বাতিল করা বা কিছু পদ বাদ দেওয়া হতে পারে। শাটডাউন সরকারের জন্য খারাপ হলেও কিছু ভালো দিকও বয়ে আনতে পারে।’

শাটডাউনের ফলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ, ছোট ব্যবসার ঋণ অনুমোদনসহ বেশ কিছু অপরিহার্য সেবা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রকেরা কাজ চালিয়ে যাবেন। যদিও তারা আপাতত বেতন পাবেন না। সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা ও খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চালু থাকবে। কিন্তু ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এবার তিনি অনেক কর্মীকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে পারেন।

ট্রাম্পের এ বক্তব্যকে ‘বলপ্রয়োগের কৌশল’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক হোয়াইট হাউস আইনজীবী রিচার্ড পেইন্টার। তিনি বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তবে সিভিল সার্ভিস সুরক্ষায় থাকা অধিকাংশ কর্মীকে সরানো তার পক্ষে সম্ভব নয়।’

ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের টানাপোড়েনই শাটডাউনের মূল কারণ। রিপাবলিকানদের প্রস্তাবিত বিল ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় মেটানোর সুযোগ দিত, কিন্তু সিনেটে পাস হয়নি। অপরদিকে ডেমোক্র্যাটদের বিলেও রিপাবলিকান সমর্থন না থাকায় সেটিও বাতিল হয়। ফলে দুই দলই এখন একে অপরকে দায়ী করছে।

সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, ‘রিপাবলিকানরা স্বাস্থ্যসেবা সংকট উপেক্ষা করে সরকার বন্ধ করে দিয়েছে।’ অন্যদিকে রিপাবলিকান নেতা জন থুন আশা প্রকাশ করেন, ‘বুধবারের পরবর্তী ভোটে সমাধান আসতে পারে।’ দ্বিদলীয় নীতি কেন্দ্র জানিয়েছে, ১৯৮০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে এটিই ১৫তম শাটডাউন। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ অচলাবস্থা হয়েছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে টানা ৩৪ দিন।

ইউকে/এসই/আরএ