তাজরিন ট্র্যাজেডির ১৩ বছর

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: ঢাকার সাভারে ভয়াবহ তাজরিন ফ্যাশন অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছরপূর্তিতে হতাহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নিহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন গার্মেন্টসের সামনে প্রতি বছরের মতো জড়ো হতে থাকেন শ্রমিকেরা।

এরপর নিহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ফুল দিয়ে নিহতদের স্মরণ করেন। এ সময় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নিহত ও আহত শ্রমিকদের এক জীবন সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের দাবি জানান।

শ্রমিকনেতারা বলেন, ‘আজকে তাজরিনের ঘটনার ১৩ বছর, কিন্তু এ ঘটনায় কোনো বিচার এখনো হয়নি। নিহত শ্রমিকদের পরিবারগুলো কষ্টে দিন পার করছে। আর আহত শ্রমিকেরা পঙ্গু হয়ে জীবন যাপন করছেন। আমাদের দাবি তাজরিনের এই ভবনটি ভেঙে এখানে শ্রমিকদের পুনর্বাসন অথবা হাসপাতালে তৈরি করা হোক ও খুনি দেলোয়ারের ফাঁসি হোক।’

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিতপুরে অবস্থিত তোবা গ্রুপের গার্মেন্টস কারখানা তাজরিন ফ্যাশন লিমিটেডের মালিক দেলোয়ারের পরিকল্পিত লাগানো আগুনে ১১৪ শ্রমিক নিহত এবং ১৭২ জন শ্রমিক গুরুতর আহত ও বহু শ্রমিক আহত হয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার মালিক দেলোয়ারসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সরকার শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার মালিক দেলোয়ারসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করেনি বরং দলীয় পদ-পদবি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। বর্তমান সরকার শ্রমিকদের বারবার আশ্বাস দিয়ে দিয়ে আসছে, কিন্তু আশ্বাস বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ দেখছি না। সবাই শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।’

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে মোট ১১৭ জন পোশাকশ্রমিক নিহত ও ২০০ জনের অধিক আহত হন। অগ্নিকাণ্ডের পরদিন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের এক যুগেও শেষ হয়নি বিচারকাজ।

সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় অবস্থিত তাজরীন ফ্যাশনসের ভবনটি এখন শুধুই সময়ের সাক্ষী। দীর্ঘ এতগুলো বছর পরে ভবনটিকে দেখলে অনেকটা ভুতুড়েই মনে হয়। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, নিহত শ্রমিকদের পরিবার ও আহত শ্রমিকেরা এদিন কারখানার সামনে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

ইউকে/এস/আর