বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: সুদানের বর্তমান গৃহযুদ্ধ, যা ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। এটি মূলত দুই প্রধান সামরিক নেতার মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের ফলাফল। এই সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সুদানি সশস্ত্র বাহিনী (Sudanese Armed Forces) এসএএফ-এর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (Rapid Support Forces) আরএসএফ-এর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো, যিনি ‘হেমেতি’ নামে পরিচিত। এই দুই জেনারেল একসময় সুদানের সাবেক রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশিরের শাসনামলে ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন, কিন্তু ক্ষমতা ভাগাভাগি, অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং সামরিক একীভূতকরণের বিষয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তারা চরম শত্রুতে পরিণত হয়েছেন। এই লড়াইয়ের ফলে সুদানে ব্যাপক ধ্বংসলীলা ঘটেছে, যার মধ্যে খার্তুমসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ চলছে এবং এটি দারফুর, কর্দোফানসহ অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সংঘাতের মূলে রয়েছে সুদানের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, যা ২০১৯ সালের বিপ্লব থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের অভ্যুত্থান পর্যন্ত বিস্তৃত এবং শেষ পর্যন্ত আরএসএফ-কে এসএএফ-এর সঙ্গে একীভূত করার প্রশ্নে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
দুই জেনারেলের পরিচয়: জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান একজন পেশাদার সেনা কর্মকর্তা, যিনি সুদানি সেনাবাহিনীতে দীর্ঘকালীন ক্যারিয়ার গড়েছেন। তিনি দারফুরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেখানে ২০০৩ সাল থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের দমন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। বুরহান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে সুদানের ঐতিহ্যবাহী সামরিক কাঠামোর প্রতিনিধিত্ব করেন, যা রাষ্ট্রীয় সম্পদ এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।
অন্যদিকে, জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো বা হেমেতি দারফুরের একটি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তিনি জঞ্জাউইড মিলিশিয়ার (আরব জাতিগত মিলিশিয়া) একটি অংশের নেতা ছিলেন, যা সরকারের পক্ষে দারফুরের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত। ২০০৩ সালের দারফুর যুদ্ধে এই মিলিশিয়া ব্যাপক নৃশংসতা চালিয়েছে, যার মধ্যে গণহত্যা এবং ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে, যা ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের অভিযোগের অংশ। ২০১৩ সালে বশির জঞ্জাউইডকে পুনর্গঠিত করে আরএসএফ গঠন করেন এবং হেমেতিকে এর প্রধান করেন। ২০১৭ সালে আরএসএফ-কে স্বাধীন নিরাপত্তা বাহিনীর মর্যাদা দেওয়া হয়। হেমেতি আরএসএফ-কে বিস্তার করেছেন, যা এখন প্রায় ১ লাখ সদস্যের বাহিনী এবং তিনি সোনার খনি, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় যুদ্ধে ভাড়াটে সৈন্য সরবরাহের মাধ্যমে বিপুল অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। আরএসএফ রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গেও যুক্ত।
এই দুই জেনারেলের দ্বন্দ্বের মূল কারণ হলো ক্ষমতার ভাগাভাগি এবং সামরিক নিয়ন্ত্রণ। বুরহান এসএএফ-এর প্রতিনিধিত্ব করেন, যা সুদানের কেন্দ্রীয় অভিজাত শ্রেণির সঙ্গে যুক্ত, অন্যদিকে হেমেতি দারফুরের মার্জিনালাইজড জাতিগত গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন এবং আরএসএফ-এর স্বাধীনতা রক্ষা করতে চান।
সহযোগী থেকে শত্রু: বুরহান এবং হেমেতি প্রথমে ওমর আল-বশিরের শাসনামলে (১৯৮৯-২০১৯) ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। বশির আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘কাউন্টারওয়েট’ হিসেবে ব্যবহার করতেন, যাতে কোনো অভ্যন্তরীণ অভ্যুত্থান ঠেকানো যায়। দারফুর যুদ্ধে (২০০৩ থেকে) তারা একসঙ্গে কাজ করেছেন। বুরহান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে, হেমেতি জঞ্জাউইডের মাধ্যমে বিদ্রোহীদের দমন করেছেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া সুদানি বিপ্লবে (Sudanese Revolution) জনগণের বিক্ষোভে বশিরের পতন ঘটে। ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল বুরহান এবং হেমেতি একসঙ্গে অভ্যুত্থান করে বশিরকে উৎখাত করেন। তারা টিএমসি গঠন করেন, যাতে এসএএফ এবং আরএসএফ উভয়ের প্রতিনিধিত্ব ছিল। কিন্তু বিক্ষোভ চলতে থাকায় ২০১৯ সালের জুন মাসে খার্তুম গণহত্যা ঘটে, যাতে আরএসএফসহ নিরাপত্তা বাহিনী ১০০-এর বেশি বিক্ষোভকারীকে হত্যা করে। আন্তর্জাতিক চাপে (আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং ইথিওপিয়ার মধ্যস্থতায়) ২০১৯ সালের আগস্টে একটি পাওয়ার-শেয়ারিং চুক্তি হয়, যাতে Transitional Sovereignty Council (TSC) গঠিত হয়। এতে অসামরিক প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদোকের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়, বুরহান চেয়ারম্যান এবং হেমেতি ডেপুটি হন এবং ২০২৩ সালে নির্বাচনের পরিকল্পনা করা হয়।
এই জোট ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। তখন বুরহান ও হেমেতি একসঙ্গে অভ্যুত্থান করে অসামরিক সরকারকে উৎখাত করেন, টিএসসি-কে সামরিক জান্তায় পরিণত করেন এবং গণতান্ত্রিক অগ্রগতি স্থগিত করেন।
এরপর অর্থনীতির অবনতি এবং বিক্ষোভ বাড়তে থাকে। দ্বন্দ্বের বীজ এখান থেকে শুরু। বুরহান বশির যুগের ইসলামিস্ট কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল করতে শুরু করেন, যা হেমেতির জন্য হুমকি, কারণ তারা হেমেতির দারফুরি আরব জাতিগত পরিচয়কে অপছন্দ করত। হেমেতি পরে ২০২১ অভ্যুত্থানের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করেন এবং নিজেকে গণতন্ত্রপন্থি হিসেবে উপস্থাপন করেন, যদিও তিনি আগে বিক্ষোভ দমনে অংশ নিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক চাপে (যুক্তরাষ্ট্রসহ) একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি হয়, যাতে আরএসএফ-কে এসএএফ-এর সঙ্গে একীভূত করার এবং অসামরিক শাসনের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে দ্বন্দ্ব আরও বাড়ে। হেমেতি আরএসএফ-এর স্বাধীনতা হারাতে চাননি, কারণ এটি তার অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য (সোনার খনি, বিদেশি যুদ্ধে অংশগ্রহণ) এবং ক্ষমতার ভিত্তি।
সময়সীমা নিয়ে বিরোধ: আরএসএফ ১০ বছরের প্রস্তাব দেয়, এসএএফ ২ বছর চায়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরএসএফ-এর নিয়োগ বাড়ায় টেনশন বাড়ে, ১১ মার্চ খাতর্তুম থেকে আরএসএফ প্রত্যাহারের চুক্তি হয়, কিন্তু একীভূতকরণ আলোচনা ব্যর্থ হয়। অবশেষে, ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল আরএসএফ এসএএফ-এর ঘাঁটিতে হামলা করে, যা গৃহযুদ্ধে পরিণত হয়। হেমেতি বুরহানকে বশির-পুনর্বহালের ষড়যন্ত্রকারী বলে অভিযোগ করেন।
ক্ষমতার লোভ থেকে যে সংঘাত: উভয়ই সুদান নিয়ন্ত্রণ করতে চান, কিন্তু পরস্পরের ওপর আধিপত্য স্থাপন করতে পারেননি। বুরহান ২০২৩ সালের ১৯ মে হেমেতিকে টিএসসি ডেপুটি পদ থেকে অপসারণ করেন এবং মালিক আগারকে নিয়োগ দেন।
আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা যেমন- ২০২৩ সালের মে মাসের জেদ্দা ঘোষণা যুদ্ধবিরতি আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এই লড়াই সুদানের জন্য বিপর্যয়কর, কারণ এতে অর্থনৈতিক স্বার্থ (এসএএফ-এর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, আরএসএফ-এর সোনা বাণিজ্য), বিদেশি সমর্থন (সংযুক্ত আরব আমিরাত আরএসএফ-কে, মিসর এসএএফ-কে) এবং জাতিগত বিভাজন জড়িত।
সহযোগিতা থেকে শত্রুতায় পরিবর্তনের মূলে রয়েছে পরস্পর অবিশ্বাস এবং ক্ষমতা হারানোর ভয়।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি: সুদানের গৃহযুদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটিয়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, UNHCR-এর তথ্য অনুসারে, মোট ১১.৮৫ মিলিয়ন মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে ৯.৫ মিলিয়ন অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এবং ৪.৩৪ মিলিয়ন শরণার্থী হয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত, ১২ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে ৭.৭ মিলিয়ন অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত। UNICEF-এর মতে, এর মধ্যে ১০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত, যাদের অর্ধেক শিশু।
যুদ্ধের কারণে কর্দোফান অঞ্চলে নতুন করে বাস্তুচ্যুতি বাড়ছে এবং ২০২৫ সালের অক্টোবর থেকে ৩৯টি ঘটনায় নতুন বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে। শরণার্থীরা মূলত চাদ, মিসর, দক্ষিণ সুদান এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশে গিয়েছে। এ ছাড়া সুদান নিজেই ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত ৮৮৯,৩৩০ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, যা যুদ্ধের মধ্যেও চলছে। এই বাস্তুচ্যুতি খাদ্য, পানি এবং নিরাপত্তার অভাবকে আরও তীব্র করেছে এবং আল ফাসেরের মতো অঞ্চলে নতুন করে স্থানচ্যুতি ঘটছে।
ভঙ্গুর চিকিৎসাব্যবস্থা এবং ত্রাণ সরবরাহে বাধা: সুদানের চিকিৎসাব্যবস্থা যুদ্ধের কারণে প্রায় পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। যুদ্ধ-প্রভাবিত অঞ্চলে ৮০ শতাংশ হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য সুবিধা অকার্যকর হয়ে গেছে, যার ফলে লাখ লাখ মানুষ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যুদ্ধের দু’বছর পর, অসুরক্ষা, ওষুধের অভাব, চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলার কারণে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধসে পড়েছে। কলেরা, মিজলস ও অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে এবং আহতরা প্রতিবেশী দেশে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে। খার্তুমের মতো অঞ্চলে হাসপাতালগুলোতে মৃত্যুর হার বেড়েছে এবং বর্ষাকালে সংকট আরও গভীর হয়েছে।
ত্রাণ সরবরাহে প্রধান বাধা যুদ্ধরত পক্ষগুলোর (SAF এবং RSF) অবরোধ ও হামলা। মানবিক সাহায্যকর্মীরা হামলার শিকার হচ্ছেন এবং ত্রাণ কনভয়গুলো বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, যা খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহকে বাধাগ্রস্ত করেছে। UNHCR-এর ২০২৫ সালের রিজিওনাল রিফিউজি রেসপন্স প্ল্যান (১.৮ বিলিয়ন ডলার) ৪.৮ মিলিয়ন শরণার্থীকে সাহায্য করার লক্ষ্য নিয়েছে, কিন্তু অর্থায়নের অভাব এবং যুদ্ধের কারণে এটি ব্যাহত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াও অপর্যাপ্ত, যা সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে।
ক্ষুধার্ত সুদান: সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধ, যা ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। এই যুদ্ধের ফলে দেশের অর্থনীতি, অবকাঠামো এবং জনজীবন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে, যার মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এবং চিকিৎসাব্যবস্থার পতন সবচেয়ে সংবেদনশীল দিক।
২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, যুদ্ধের কারণে প্রায় ৩০ মিলিয়ন মানুষ মানবিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তায় পড়েছে এবং এটিকে ২০২৫ সালের সবচেয়ে উপেক্ষিত সংকট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দুর্ভিক্ষের হাতছানি: বিশ্বের অন্যতম বড় খাদ্যসংকটের কেন্দ্রস্থল এখন সুদান। সুদানের গৃহযুদ্ধ খাদ্যসংকটকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইনটিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন-এর বিশ্লেষণ অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ বা প্রায় ২১.২ মিলিয়ন মানুষ উচ্চমাত্রার তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর মধ্যে ১.২ মিলিয়ন মানুষ ‘ক্যাটাস্ট্রোফিক’ (IPC ফেজ ৫) স্তরের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে, যা দুর্ভিক্ষের সমতুল্য। দুর্ভিক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে নর্থ দারফুরের আল ফাসের এবং সাউথ কর্দোফানের কাদুগলিতে নিশ্চিত হয়েছে এবং গ্রেটার দারফুর ও গ্রেটার কর্দোফানের অতিরিক্ত ২০টি এলাকায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি রয়েছে। নভেম্বর ২০২৫ সালে দুর্ভিক্ষ দুটি অতিরিক্ত অঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছে, যেখানে গৃহস্থালির এক-পঞ্চমাংশ চরম খাদ্যাভাবে ভুগছে এবং শিশুদের মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত। এই সংকটের মূল কারণ যুদ্ধের কারণে কৃষি উৎপাদনের পতন, বাজারব্যবস্থার ধ্বংস, ত্রাণ সরবরাহে বাধা এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম এটিকে ‘আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট’ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যেখানে যুদ্ধের কারণে অবরোধের ফলে লাখ লাখ মানুষ খাদ্য থেকে বিচ্ছিন্ন। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, ২১ মিলিয়ন মানুষ তীব্র ক্ষুধায় ভুগছে এবং সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, যুদ্ধ না থামলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে এবং সুদান বিশ্বের সবচেয়ে উপেক্ষিত সংকট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ইউকে/আরএ/এস