অধ্যাপক সোবহানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করবে তদন্ত কমিটি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান মেয়াদের শেষদিন বিভিন্ন দফতর ও বিভাগে অস্থায়ী ভিত্তিতে (অ্যাডহক) ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন।

বিতর্কিত এই নিয়োগে বেশকিছু অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি।

এজন্য আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হবে। আগামী সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, গত ৬ মে উপাচার্য হিসেবে শেষ কার্যদিবস পালন করেন অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহান। মেয়াদের শেষ দিনেই অ্যাডহকে নিয়োগ দেন ১৪১ জনকে। এর মধ্যে শিক্ষক পদে ৯ জন, কর্মকর্তা পদে ২৩ জন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পদে ৮৫ জন, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ২৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান, স্ত্রী ও স্বজন, ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মী ও সাংবাদিক রয়েছেন।

বিতর্কিত এই নিয়োগকে অবৈধ উল্লেখ করে এদিন সন্ধ্যায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্ত কমিটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। তার সঙ্গে রয়েছেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. জাকির হোসেন আখন্দ ও ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান।

তদন্ত কমিটির দু’জন সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই গণনিয়োগ দিয়েছেন কিনা তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখেছে। এতে তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা সেটিও অনুসন্ধান করা হয়। তদন্ত কমিটি এই নিয়োগে বেশকিছু অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে।

নিয়োগপত্রে বর্তমান রেজিস্ট্রার স্বাক্ষর করেননি। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্তদের ৯ জন ছাড়া বাকিদের জীবনবৃত্তান্ত মেলেনি। এসব অনিয়মের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে। নিয়োগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা তদন্ত কাজ শেষ করেছি। তদন্তে সাবেক উপাচার্যের অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হতে পারে।

এর আগে, গত ৯ মে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় এসে অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানসহ নিয়োগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

ইউকে/এসএম