নিজস্ব প্রতিবেদক: রাতের আঁধারে পাচারের সময় খাদ্য অধিদপ্তরের সিল মারা ৪০০ বস্তা গম জব্দের ঘটনায় মূল হোতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি হলেন- পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। বুধবার (২৬ মে) ভোরে নওগাঁর শিবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে। গত ৯ মে রাতে কাঁকনহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের রসুলপুর কুমদপুর দীঘিপাড়ায় আতার বাড়ীর প্রধান ফটক থেকে পুলিশ চারটি ট্রলিসহ খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহরকৃত ৪০০ বস্তা গম জব্দ করে।
কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশের পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান জানান, আতাউরকে গ্রেফতারের জন্য কয়েকদফা অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তিনি বার বার অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। তাঁকে ধরা যাচ্ছিল না। অবশেষে নওগাঁ সদর থানা পুলিশের সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি নওগাঁয় পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আতাউর রহমান জানিয়েছেন, তিনি পঞ্চগড় থেকে গমগুলো কিনে ট্রাকে করে কাঁকনহাটে আনেন। এরপর ট্রাক থেকে নামানোর পর আলাদা খাদ্য অধিদপ্তরের বস্তায় ভরে গমগুলো ট্রলিতে তুলে রেখেছিলেন। পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘গমগুলো কালোবাজারির জন্য রাখা হয়েছিল। এটা অবৈধ মজুত। তাই জব্দ করা হয়েছিল।’
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, কৃষক নয়, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ব্যবসায়ীরাই এখন বাইরে থেকে নিম্নমানের গম সংগ্রহ করে এনে গুদামে দিচ্ছেন। গুদাম থেকে ব্যবসায়ীদের খাদ্যবিভাগের সিলযুক্ত বস্তাও সরবরাহ করা হচ্ছে। এই বস্তায় ভরে ব্যবসায়ীরা গম দিচ্ছেন। এতে তাঁরা লাভবান হচ্ছেন। আতাউরের বাড়ি থেকে জব্দ করা গমগুলোও খাদ্যগুদামে ঢোকানো হতো। তিনি গুদামে ধানও ঢোকান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এই বিষয়টা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে গমগুলো অবৈধ বলেই তো আতাউর পালিয়ে ছিলেন। তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, যেদিন গম জব্দ করা হয় সেদিন পুলিশের উপস্থিতি টের পয়ে ট্রলি চালকেরা পালিয়ে যায়। তখন মূল হোতা আতাউর না এসে তার প্রতিনিধি হিসেবে কাঁকনহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোর্তুজা শেখ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আল মামুন, বর্তমান পৌর মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী চয়ন ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি খাত্তাব পুলিশের নিকট একটি ভূয়া বিল ভাউচার দাখিল করেছিলেন।